
“দিরিলিস এরতুগ্রুল” একটি ঐতিহাসিক – ইসলামিক – অ্যাডভেঞ্চার টেলিভিশন ধারাবাহিক। ২০১৪ থেকে ২০১৭ টানা ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বের ৬০ টিরও বেশি দেশের অন্যতম জনপ্রিয় এই টিভি সিরিয়ালটি। ২০১৪ সালের ১১ ডিসেম্বর দিরিলিস প্রথম পর্ব মুক্তি পায়। তারপর থেকেই বিশ্ব জয়।
🔷 গিনেস রেকর্ড
🔷 ৫৫ ভাষায় ডাবিং
🔷 ১৪৫ দেশে সম্প্রচার
🔷 প্রায় ৩০০ কোটি ভিউ।
🔷 দিরিলিস দেখে ইউরোপে কয়েকজন ইসলাম ধর্ম ও গ্রহণ করেছে।
দিরিলিস এরতুগ্রুল (Diriliş Ertuğrull) যার ইংরেজি নাম হচ্ছে Resurrection Ertuğrul যার বাংলা করলে অর্থ দাড়ায় এরতুগ্রুলের উত্থান। অর্থাৎ অটোম্যান সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ১ম উসমানের পিতা হচ্ছেন এরতুগ্রুল গাজী। আর তার ইতিহাস নিয়েই নির্মিত হয়েছে দিরিলিস এরতুগ্রুল নামের এই টিভি সিরিয়ালটি। এই দিরিলিস কে এটম বোম বলে মন্তব্য করেছেন আমেরিকার পেন্টাগন এর এক শীর্ষ কর্মকর্তা। জনপ্রিয় তাও তুঙ্গে। দিরিলিস এমন সিরিজ পরিবার নিয়ে একসাথে উপভোগ করা যায় সুস্থ সংস্কৃতির অগ্রযাত্রা এই দিরিলিস দিয়েই শুরু হয়, এই সিরিয়ালের মূল নাম দিরিলিস এরতুগ্রুল হলেও বাংলা ভাষায় ডাবিং করে প্রথম সম্প্রচার করা হয় বাংলাদেশে ২০১৭ সালে একুশে টিভিতে সীমান্তের সুলতান নামে। একুশে টিভিতে দেখানো সিরিয়ালটির প্রিন্ট এতো ভালো ছিলোনা সেই সাথে এপিসোডের ব্যপ্তিও ছিল খুবই কম। তথাপি সিরিয়ালটি একুশে টেলিভিশনে সম্প্রচারের এক মাসের মাথায় টিআরপিতে ৭ নাম্বারে ওঠে আসে। এতো অপ্ল সময়ে বাংলাদেশে প্রচারিত আর কোন টিভি সিরিয়াল এতো জনপ্রিয় হয়েছে বলে জানা নেই। তথাপি একুশে টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ হটাৎ করেই বাংলাদেশে সিরিয়ালটির সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়। তারপর দীর্ঘ ৩ মাসের বেশি সময় ধোঁয়াশা এবং অপেক্ষার প্রহর শেষ করে স্বনামে আবার বাংলায় ডাবিং হয়ে আগের চাইতে বেশি সময় এবং সেইসাথে এইচডি প্রিন্ট নিয়ে মাছরাঙা টিভিতে প্রথম দেখানো হয় মাত্র দুই সিজন ডাবিং। এখন পর্যন্ত যারা এটা দেখেছে তাদের কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয় এই সিরিজ। বাংলাদেশে অনেক মুসলমান মন্তব্য করেছে যে, দিরিলিস দেখে তাদের জীবন পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে।
তুর্কি এই সিরিয়ালটি সম্পর্কে কিছু তথ্য যা, দর্শকদের সিরিয়ালটি দেখতে আগ্রহী করে তুলবে, ২০১৪ সালে থেকে সিরিয়ালটি তুর্কিতে চলার পর থেকে এখন পর্যন্ত টিআরপিতে এক নাম্বারে রয়েছে, মজার বিষয় হচ্ছে, রেটিং দাতাগণ ‘দিরিলিস: এরতুগরুল’কে ২০১৪ মৌসুমের সবচেয়ে সফল তুর্কি টিভি সিরিয়াল হিসেবে উল্লেখ করেন। সিরিয়ালটির প্রথম পর্ব সম্প্রচারের পর এটি তুর্কি সামাজিক গণমাধ্যমে সাড়া ফেলে দেয়।
অনেককেই বলতে শোনা যায় দীপ্ত টিভিতে প্রচারিত এরতুগ্রুল গাজীর উত্তরসূরিদের নিয়ে নির্মিত বিশ্ব কাঁপানো টিভি সিরিয়াল ‘সুলতান সুলেমান’ যা বর্তমানে বাংলাদেশে টিআরপিতে অনেক আগিয়ে থাকাকে পিছনে ফেলে ‘দিরিলিস এরতুগ্রুল’ অচিরেই অনেক আগিয়ে যাবে।
যাইহোক, এই সিরিয়ালে ওঠে এসেছে এরতুগরুল গাজীর অসামান্য বীরত্বপুর্ন সাহসিকতা ও অসামান্য বুদ্ধিমত্তা এবং ইহুদী-খ্রিস্টানদের করাল গ্রাস থেকে মুসলিম সাম্রাজ্যকে রক্ষা করে কিভাবে বিশ্বব্যাপী বহু সময় ধরে রাজত্ব করা উসমানীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা পায় তার প্রেক্ষাপট। এরতুগ্রুল ছিলেন একজন অসীম সাহসী পুরুষ। একদিন, এরতুগ্রুল ও তার তিন বন্ধু ইহুদী নাইটসদের হাত থেকে হালিমা খাতুন ও তার পরিবারকে উদ্ধার করে। হালিমা ও তার পরিবার সেলজুক সাম্রাজ্যের এক অভিজাত পরিবারের সদস্য ছিল। কিন্তু হালিমাদের আশ্রয় দেয়ায় বংশে নতুন সমস্যা দেখা দেয়; সেলজুক সাম্রাজ্যকে যুদ্ধের হুমকি দিয়ে তাদের ফিরিয়ে দিতে বলা হয় এবং নাইট টেম্পলারসরা প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠে। এ কারণে বেদুঈনরা এরতুগরুলের বাবা সুলায়মান শাহকে একজন খারাপ নেতা হিসেবে দোষ দিতে থাকে কিন্তু তিনি আশ্রিত মেহমানদের মৃত্যুর মুখে ছেড়ে দিতে নারাজ! কিন্তু তার এই ভাল মানুষির সুজুগে জ্ঞাতি ভাই কুরদগলু তার গোপন ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের সুযোগ পায়। সুলায়মান দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে এরতুগরুলকে নতুন আবাস অনুসন্ধানের অভিযানে পাঠান। এরতুগরুল ও তার তিন বন্ধু সুলতানের সঙ্গে চুক্তির লক্ষ্যে আলেপ্পোয় যান এবং শুরু হয় অটোম্যান সাম্রাজ্যের ভিত্তি স্থাপনের যা, পরবর্তী ছয় শতাব্দী জুড়ে অটোম্যান রাজবংশের অধীনে একটি বিশ্বময় সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিল।
অনুষ্ঠানটির যথাযথ চিত্রায়নের জন্য হলিউডের এক্সপেন্ডিবলস ২, রন ইন, কোনান দ্য ব্যারব্যারিয়ানের মত চলচ্চিত্রের প্রোডাকশন টিমকে নিয়োগ করা হয়, যারা অভিনেতা, ঘোড়া ও অন্যান্য দৃশ্যের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করেন।
এই অনুষ্ঠানের প্রয়োজনে চিড়িয়াখানার মত করে ছোট আকারের একটি বিশেষ এলাকা প্রস্তুত করা হয়েছে যেখানে অনুষ্ঠানের দৃশ্যায়নের বিভিন্ন পশুপাখি রাখা আছে যার মধ্যে ২৫ টি শুধু ঘোড়াই রয়েছে! আর পশুপাখিগুলোর দেখভাল করার জন্যে আছেন ২৪ ঘণ্টার জন্যে নিয়োগকৃত পশুচিকিৎসক।
প্রতি পর্বে ৭ লক্ষ আমেরিকান ডলার বাজেট সম্পন্ন এই অনুষ্ঠান – শিল্প নির্দেশনার ক্ষেত্রে টেলিভিশনের ইতিহাসে একটি অন্যতম মাইলফলক।
বাংলাদেশে মাছরাঙা টিভিতে প্রথম দেখানো হয় মাত্র দুই সিজন ডাবিং এর পরের সিজন গুলো আর সম্প্রচার করে নাই। অনেকে বলেছেন টিভি মিডিয়া এসোসিয়েশন থেকে সম্প্রচার বন্ধ করতে তুখড় দাবির মুখে পরে আর সম্প্রচার করে নাই। আবার কেউ বলেন সরকারে চাপে বন্দ করেছেন এই সিরিয়াল, আবার অনেকের মন্তব্য হলো যে মাসরাংগা টিভির মালিক যেহেতু হিন্দু তাই এটি বন্দ করে দিয়েছে তবে বর্তমানে জনপ্রিয় টিভি চেনেল আই এবং বাংলালিংক টফি এপ্স এর মাধ্যমে এই সিরিজটির বাংলা ডাবিং সম্প্রচার শুরু করেছে।
কিন্তু দুঃখের বিষয় এই সিরিজটি অনলাইনে বেশিদিন থাকে না সব জায়গা থেকে ডিলেট করে দেয়া হয়। তাই আমাদের কালেকশনে থাকা আপনাদের সুবিদার জন্য এই সিরিজটির সম্পূর্ণ এইখানে আপলোড করবো এইখান থেকে সরাসরি আপনারা এই সিরিজটি দেখতে পারবেন। বর্তমানে আমাদের কালেকশনে রয়েছে সিজন ১ থেকে সিজন ২ বাংলা ডাবিং এবং সিজন ৩ থেকে সর্বশেষ সিজন ৫ উর্দু বা হিন্ডি ডাবিং। এবং বাংলা সাবটাইটেল।
0 মন্তব্যসমূহ